শিরিন আখতার

বয়ানদাতার নামঃ সাহেব আলী (স্বামী), সিয়াম সায়েম (ছেলে) সুফিয়া বেগম (মা)    

শিরিন পড়াশুনায় ভালো ছিল, কিন্তু অর্থের অভাবে ৫ম শ্রেনির বেশী পড়তে পারিনি। ১২ বছর বয়সে সাহেব আলীর সাথে বিয়ে হয়, তার একবছর পর (২০০৪) দুজনে ঢাকায় চলে আসে। শিরিন মাত্র তিন মাস তাজরীনে কাজ করেছিল। ঘটনার আগের দিন সে বাচ্চাকে নিয়ে মায়ের বাসায় গিয়েছিল। তখন বড় ছেলের বয়স ছিল , আর ছোটটা দেড় বছর। ২৪শে নভেম্বর সকালে মাছ রান্ন্া করে শিরিন কাজে চলে যায়, তারপর দুপুরে লাঞ্চের সময় বাসায় এসে বাচ্চাদের গোসল করিয়েছিল, তারপর ৪জনে একসাথে খাবার খেয়ে সে তাজরীনে চলে যায়। সেদিন শিরিন ওভারটাইম কাজ করছিল। সুফিয়া বেগম তখন এজে গার্মেন্টসে কাজ করতো, খবর শুনে মেয়ের খোঁেজ সঙ্গে সঙ্গে তাজরীন ফ্যাক্টরীর সামনে চলে আসে। কিন্তু শিরিনকে খুঁজে পাই না।

বাড়িওয়ালা খলিল মোল্লা নিশিন্তপুর স্কুল মাঠে সারি সারি লাশের মধ্যে শিরিনের নাক ফুল হাতের আংটি দেখে চিহ্নিত করে। তার মুখে কোন পোড়া দাগ ছিল না, ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে।

শিরিনের স্বপ্ন ছিল আয় করে ছেলেদের জন্য বাড়ি নির্মান করবে। ক্ষতিপূরনের টাকা দিয়ে সেই বাড়িঘর হলো, কিন্তু শিরিন তা দেখে যেতে পারলো না। পরিবার মনে করে, ’আগুন লাগানো হয়েছিল, তা না হলে কেন গেটে তালা লাগানো ছিল। এত বড় তলা বিল্ডিং থেকে বের হওয়ার রাস্তা থাকবে না, কোন নিয়ম থাকবে না! এর অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত।মায়ের কথা শুনলে সিয়াম সায়েমের খুব মন খারাপ হয়, বিষয় নিয়ে ওরা কথা শুনতে চাই না, কিছু বলতেও চাই না।

2022 © All Rights Reserved | Designed and Developed by decodelab