আনোয়ারা বেগম

বয়ানদাতার নামঃ  সহিদা বেগম (মা)

পরিবারের সদস্যঃ  রিক্তা (মেয়ে, ১৭), মাহাবুল-আশিকুল-সাহিনুর ( ভাই), হাবিবুর (স্বামী)

সাড়ে চার শতক জমির উপর ভিটে ছাড়া আর কোন জমিজামা ছিলনা আনোয়ারের পরিবারের, তাছাড়া অনেক ধারদেনাও হয়ে গিয়েছিল। অভাবের কারনে সব ভাইবোনরা মিলে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে আসে, ভাইরা রিক্সা চালাতো, আনোয়ারা স্বামীসহ ঢাকায় চলে আসে। আনোয়ারার মামী মিনারা বেগম আগে থেকেই নিশ্চিন্তপুরে থাকতো, তার সূত্র ধরে সে তাজরীনে ঢোকে। মা, সহিদা বেগম অগ্নিকান্ডের দিন গ্রামের বাসায় ছিলেন, রাত ৮টার দিকে ছেলে ভাইয়ের বউ এর কাছ থেকে ঘটনা জানতে পারে, সেই সাথে আনোয়ারাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আনোয়ারা কারখানার ভিতর থেকে মিনারাকে ফোন দিয়ে বলছে, ”মামী আমরা মারা যাচ্ছি”, তারপর বারবার ফোন দিলেও কেই সেই ফোন রিসিভ করেনি। অগ্নিকান্ডের এক মাস আগেই মাকে আশুলিয়ায় বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিল, তখনই আনোয়ারের সাথে শেষ দেখা। আনোয়ারার পরনের কামিজ, নাকফুল, চুলের বাঁকা সিঁিধ দেখে স্কুলের মাঠের সারি সারি লাশের মধ্যে থেকে মিনারা ওকে চিহ্নিত করে। আনোয়ারের সাথে তার স্বামী হাবিবুরও মারা যায়। ক্ষতিপূরনের কোন টাকায় মা সহিদা পাইনি, আনোয়ারের শ্বশুর, মোশারফই সব টাকা নিয়ে গেছে, পরে গ্রামবাসীরর চাপে মোশারফ সহিদাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়। মা বলে, ”টাকায় ক্ষতিপূরন হয়না কখনো, আমার টাকা ছিলনা, কিন্তু আমার মেয়ে ছিল।তাজরীন ঘটনার বিচার কার্যক্রম চলমান সে জানে, এবং মা এখনো আশাবাদীবিচার একদিন পাবোই।

2022 © All Rights Reserved | Designed and Developed by decodelab