আহিনুর বেগম

নিশ্চিন্তপুরের স্কুল মাঠে আহিনুর বেগমের  লাশ খুঁজে না পেয়ে তার স্বামী রুহুল হান্নান ছেলে আলী হোসেনকে নিয়ে দেশের বাড়ি গাইবান্ধা চলে যান। সেখানে গায়েবানা জানাজা পড়ানো হয়, সাতদিনের খাওয়ার আয়োজন করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের  ৮/১০দিন পর নিশ্চিন্তপুরে ফিরে আসে। তখন সকল নিখোঁজ শ্রমিকের পরিবার ডি.এন.এ টেস্টের কথা বলাবলি করছে। ডি.এন.এ টেস্ট করলে নাকি লাশের সন্ধান পাওয়া যাবে। আহিনুরের ছেলে,  খুবই মায়ের নেওটা ছিল। সে মায়ের শোকে অস্থির। লাশ খুঁজতে রক্ত দিতে হবে, এসব কথা তার মাথায় ঢোকে না। এলাকার অন্য নিখোঁজ পরিবারের সাথে ডি.এন.এ টেস্টের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে যায়। কিন্তু ডি.এন.এ টেস্টে আহিনুর বেগমের লাশের সন্ধান পাওয়া যায় না।   ডি.এন.এ টেস্ট রেজাল্ট-এর তালিকায় তার নামের পাশে লেখা একটা নম্বর ID3-12-BL-07, আর এই নম্বরটির পাশের ঘরে লেখা, No Match Found।  তালিকায় মেয়ের নাম নেই শুনে আহিনুরের বাবা সাংবাদিকদের বললেন, “আমার মেয়েকে বিয়ে দিছি ১৯৮৭ সালে। সেই থেকে মেয়ে সংসার করছে। মেয়ের ঘরে জোয়ান নাতিন আছে আমার। নিশ্চিন্তপুর গ্রামের লোকে জানে, বাছাইহাট গ্রামের লোকে জানে, আমার মেয়েটা আগুনের পরে আর ফিরে আসে নাই। সবাই জানে, ঐ হাসপাতালের ভিতরে বন্ধ ঘরে টেস্ট-ফেস্ট করে কি প্রমাণ করবে?”  আহিনুরের পরিবার স্বজনকে কবর দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আহিনুর একটা কবর পায়নি, এই শোক তারা এখনও বহন করেন।  

drik-logo
wave-image
2022 © All Rights Reserved | Designed and Developed by decodelab